প্রতিযোগিতার এই পৃথিবীতে নিজেকে সফল করার জন্য সর্বোচ্চ সাধ্য দিয়েই আপনাকে চেষ্টা করতে হবে। কীভাবে নিজেকে সফল করবেন, তার জন্য ১১টি ক্যারিয়ার টিপস
লক্ষ্য নির্ধারণ করুন : আপনার ক্যারিয়ারের স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। মাঝে মাঝে নিজের কাজগুলো পর্যালোচনা করুন, আপনি যেভাবে চাচ্ছেন সেভাবেই আপনার লক্ষ্যের দিকে আপনি এগোতে পারছেন কিনা। যদি মনে হয়, যেভাবে চাচ্ছিলেন সেভাবে হচ্ছে না, তবে কোন কোন সমস্যার কারণে পিছিয়ে পড়ছেন খুঁজে বের করুন এবং সমাধান করার চেষ্টা করুন।
ফোকাসড হোন : আপনি যদি শারীরিক অথবা মানসিকভাবে কিছুটা বিপর্যস্ত হয়েও থাকেন, চেষ্টা করুন সেই সমস্যাগুলো একপাশে সরিয়ে রেখে আপনার ক্যারিয়ার এবং কাজের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে। চেষ্টা করুন ক্যারিয়ারের প্রতি ফোকাসড হতে।
যত পারেন নিজের স্কিল বাড়ান : যতটা সম্ভব নিজের জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা বাড়ানোর চেষ্টা করুন। প্রতিযোগিতার এ সময়ে অন্য সবাই যখন প্রতিনিয়ত নিজের জ্ঞান ও কোয়ালিটি বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করছে, আপনি সেটা না করলে পিছিয়ে পড়বেন। ইন্টারনেট অথবা বই যেখানে ভালো লাগে পড়ার চেষ্টা করুন। যত পড়বেন ততই জানবেন এবং শিখবেন, পড়ার কোনো বিকল্প এখনো তৈরি হয়নি।
অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করুন : আপনার সারা দিনের কাজের পরিকল্পনা করুন। কী কী কাজ করবেন তার তালিকা তৈরি করুন এবং কোন কাজগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে করবেন, সেটা ঠিক করুন। এ ক্ষেত্রে যে কাজটা অধিকতর জরুরি, সেটা আগে তারপর বাকিগুলো করার চেষ্টা করুন। আর যখন সবগুলো কাজই জরুরি এবং স্বল্পতম সময়ে সবগুলোই শেষ করতে হবে আপনাকে, সে ক্ষেত্রে প্রত্যেক কাজের জন্য প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ের শিডিউল তৈরি করুন এবং সে সময়ের মধ্যে শেষ করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন।
সামাজিক হোন : সুযোগ হলে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকা-ে অংশগ্রহণ করুন। সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতেও নিজের অংশগ্রহণ বাড়াতে থাকুন, এতে অনেক নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাবেন। এভাবে মানুষের সঙ্গে মেশার অভিজ্ঞতা হবে এবং আপনার নতুন নতুন ক্ষেত্রের যোগাযোগ বাড়বে। কে বলতে পারে, কখন কোন কানেকশন আপনার কাজে লেগে যাবে।
নিজের গুণ সম্পর্কে সজাগ থাকুন : এ পৃথিবীর কেউই পরিপূর্ণ নয়, প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু দুর্বলতা আছে। নিজেকে জানুন, কোন কোন কাজে আপনি বেশি সামর্থ্যবান আর কোন কোন কাজে আপনি দুর্বল জেনে নিন এবং দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করুন। দুর্বলতা আমাদের সবারই আছে; কিন্তু যে যতটা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করতে পারে, সেই তত বেশি সফল হতে পারে।
চ্যালেঞ্জ নিন : নতুন কোনো কাজকে এড়িয়ে যাবেন না, চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করুন। আপনার অব্যাহত চেষ্টা আপনাকে অন্য এক উচ্চতায় যেতে সাহায্য করবে। চ্যালেঞ্জ নিয়ে সফল হলে আপনার আত্মবিশ্বাস যেমন বেড়ে যাবে বহু গুণ, অন্যের কাছেও আপনার যোগ্যতা আপনি প্র্রমাণ করতে পারবেন।
যোগাযোগক্ষমতা বাড়ান : সময়টাই এখন যোগাযোগের। যত বেশি যোগাযোগ, তত বেশি সুযোগ। অন্যদের কথা শুনুন, জানুন। কারণ প্রতিটা মানুষেরই ভিন্ন ভিন্ন অভিজ্ঞতা আছে জীবন ও ক্যারিয়ারের ক্ষেত্রে তা আপনার কাজে লাগুক অথবা না লাগুক। এতে আপনার জ্ঞানের পরিধি বাড়বে এবং কোনো জ্ঞানই শেষ পর্যন্ত বৃথা যায় না।
গসিপ এড়িয়ে চলুন : আপনি যেই প্রফেশনেই থাকুন না কেন, নিজের প্রফেশনের পাশাপাশি অন্যের কাজকেও সম্মান করুন। অফিসের বস, সহকর্মীদের সম্পর্কে গসিপ এড়িয়ে চলুন। অন্যেরা করে করুক, আপনি চেষ্টা করুন এতে অংশগ্রহণ না করতে। এভাবে অন্যের কাছে আপনি আলাদা একটি গ্রহণযোগ্যতা পাবেন।
সন্তুষ্টি খুঁজে নিন : আপনি আপনার কাজের ক্ষেত্রে সন্তুষ্ট না থাকলে, এ কাজেরই কোনো না কোনো ভালো দিক খুঁজে বের করুন এবং এই ভালো দিকটিকে ভালবাসুন। এতে আপনার হতাশা দূর হবে। তার পরও যদি সেটা না হয়, ভিন্ন কোথাও চেষ্টা করুন।
কনফুসিয়াস বলেছেন, ‘এমন কাজ করুন যা করতে ভালবাসেন, তাহলে আপনার জীবনে আপনাকে একদিনের জন্যও আর কাজ করতে হবে না।’
রিলাক্স হোন : মাঝে মাঝে ভিন্ন কিছু করুন, যা আপনার ভালো লাগে; যা আপনার হবি। নিজেকে মাঝে মাঝে সময় দিলে আপনি সপ্তাহের বাকি কর্মদিবসগুলোয় কর্মস্পৃহা ফিরে পাবেন।
জীবন অথবা ক্যারিয়ার যেখানেই সফল হতে চান, তার জন্য আগে নিজেকে তৈরি করুন, নিজেকে ভালবাসুন এবং নিজেকে জানুন। নিজেকে তৈরি করতে পারলে দেখবেন শুধু ক্যারিয়ার নয়, আপনার জীবনের সবকিছুই নিয়ন্ত্রণে চলে আসছে।
গ্রন্থনা : ফারজানা আকতার
সংগ্রহ- দৈনিক আমাদের সময়
Comments
Post a Comment
Waiting for your replied