চাকরির বাজার>>ক্যারিয়ার>>চাকরির খোঁজে>>চাকরিকে নিয়ে আসুন দরজায়
স্কুলের গন্ডি পার হতে না হতেই কমবেশি সকলেরই টনক নড়ে এই ভেবে “অনেক তো হলো ক্লাসে ফার্স্ট হওয়ার প্রতিযোগিতা, এবার নাহয় ফিউচার ক্যারিয়ার নিয়ে একটু সময় দেই।“ ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার কিংবা কর্পোরেট দুনিয়ায় সফল একটা প্রফেশন- এরকম একটা ক্যারিয়ারই কিন্তু আমরা সকলেই মনে মনে ধারণ করে থাকি। কিন্তু গ্র্যাজুয়েশনের পর কয়জনই বা মনমতন চাকরি পায়? এখন হয়তো অনেক গুরগম্ভির স্বভাবের মানুষজন মোটা কণ্ঠস্বরে বলে উঠবেন “যোগ্যতা থাকলেই চাকরি পাওয়া যায়।“ আমি কথাটার সাথে আরো একটি লাইন যোগ করে বলতে চাই “যোগ্যতার সাথে ছোট ছোট কিছু পন্থা অবলম্বন করলেই চাকরি পাওয়ার পথটা অনেকটাই সুগম হয়ে যাবে।“
এখন যদি বলা হয়, কিভাবে সহজে চাকরি পাওয়া সম্ভব? অনেকে হয়তো অনেক হাইপোথেটিকাল সুরে বলবে “আগে লক্ষ্য ঠিক করতে হবে, তারপর লক্ষ্য পূরণের জন্য যথাসম্ভব সবকিছু করতে হবে।” অত গভীরে না গিয়ে বরং জেনে রাখি, একটা সফল চাকরিজীবী হতে হলে সুনির্দিষ্ট কিছু এপ্রোচ রয়েছে, যেগুলো আপনার ক্যারিয়ার গড়তে নানাভাবে কাজে দিবে। কিভাবে? চলুন দেখে নিই…
সিজিপিএটা আরেকটু বাড়াতে হবে
এখনকার সময়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটা প্রচলিত মেন্টালিটি হলো, পড়াশুনার চেয়ে এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটিকে বেশি প্রাধান্য দেয়া। হ্যা, এটা সত্য যে আজকের চাকরির বাজারে টিকে থাকতে হলে পড়াশুনার পাশাপাশি এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটি অনেক বেশি জরুরি। তবে মুহাম্মদ জাফর ইকবার স্যার একবার বলেছিলেন,
“পড়াশুনা হলো ১ এবং এক্সট্রা কারিকুলাম এক্টিভিটি হলো ০। ১ এর আগে যতই শূন্য বসানো হোক না কেন, সংখ্যাটির ভ্যালু কিন্তু অপরিবর্তিতই থাকবে। কিন্তু ১ এর পরে যত শূন্য বসানো যায়, সংখ্যাটির ভ্যালু ততই বড় হতে থাকবে।“
কোনো সাবজেক্টকেই ছোট করে দেখার অবকাশ নেই। নিজের পছন্দমত সাবজেক্ট পাননি বলে শুধুমাত্র ন্যূনতম একটা গ্রেডের পেছনে ছোটা অনর্থক। তারচেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটা বছর কষ্ট করে ভালো একটা রেজাল্ট নিয়ে বের হতে পারলে নানাদিকে ক্যারিয়ার করার অনেক সুযোগ আপনা আপনিই সামনে চলে আসবে। জেনে রাখা ভাল- বাংলাদেশে সিজিপিএ ৩.০ এর নিচের যেকোনো গ্রেডের ট্যাগলাইন সঙ্গে নিয়ে স্বনামধন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরির আবেদন করাটা অনেক বেশি বিপদজনক।
শুধুমাত্র ব্যক্তিগত সিভিতে দুটো লাইন বেশি লেখার জন্য আমরা অনেক সময় পড়াশুনা ভুলে বিভিন্ন ক্লাব এক্টিভিটি, সোশ্যাল এক্টিভিটি নিয়ে মেতে থাকি। তারপর দেয়া যায় যে আপনার সিভিটা খুলে দেখার সাথে সাথে সেটা বাতিলের খাতায় চলে যায়। ফেসবুকের যুগে “এত পড়াশুনা করে কি হবে, একদিন তো মরেই যাবো”- এসব ফ্যান্টাসিতে বুঁদ না হয়ে পরের সেমিস্টারে নিজের সিজিপিএ আরেকটু বাড়িয়ে নেয়াটাই হয়তো বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
হোক কিছু লেখাপড়ার বাহিরেও
কাজী আইটি ক্যারিয়ার বুটক্যাম্পের স্টেজে আয়মান সাদিক ভাইয়া আমাদের এডুকেশন সিস্টেম নিয়ে একটা ধারণা দিয়েছিলেন, যেটার নাম হলো “ডিগ্রি ইনফ্লেশন।“ মানি ইনফ্লেশন বা মুদ্রাস্ফীতি তো সকলেরই জানা রয়েছে, বিশেষ করে বিবিএ কিংবা ইকোনমিক্স এর শিক্ষার্থীদের। মানি ইনফ্লেশন হলে যেভাবে টাকার মূল্য ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে, ঠিক সেভাবেই আজকের শিক্ষাব্যবস্থায় ডিগ্রির মূল্য কমতে শুরু করছে। এটির নামই হচ্ছে ডিগ্রি ইনফ্লেশন। অর্থাৎ কেবল শিক্ষাগত যোগ্যতার উপর ভর করে চাকরির আশা করাটা একরকমের বোকামি হবে। তাই নিজের ফিউচার ক্যারিয়ারটাকে আরেকটু শানিয়ে নিতে লেখাপড়ার পাশাপাশি আজই শুরু করে দেয়া উচিত নতুন কোনো এক্টিভিটি। সেটা শুরু হতে পারে ভার্সিটিতে সফল কোনো ইভেন্ট আয়োজনের মাধ্যমে, মডেল ইউনাইটেড ন্যাশনস এ কোনো দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার মাধ্যমে কিংবা বিওয়াইএলসির মত কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে লিডারশীপ সংক্রান্ত কোনো ট্রেনিং নেয়ার মাধ্যমে।
আগামী দিনগুলোতে হাজার হাজার গ্র্যাজুয়েটদের মাঝে এসব ছোট-বড় অভিজ্ঞতাই আপনাকে অনন্য করে তুলবে। মনে রাখতে হবে, আপনার এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটিগুলো যেন আপনার কাঙ্ক্ষিত ক্যারিয়ার রিলেটেড হয়। তাই বলে কেউ নিজেদের ভাল গান গাওয়া অথবা ভার্সিটির অডিটোরিয়ামের স্টেজ কাঁপানো নাচকে এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটির কাতারে না ফেলাটাই শ্রেয়, কেননা আক্ষরিক অর্থে এগুলো কর্পোরেট ক্যারিয়ারের জন্য খুব বেশি একটা উপযোগী হবেনা।
বাড়তি ভাষা জেনে রাখি
বাংলা-ইংলিশ তো কমবেশি আমরা সবাই জানি। এখন ধরা যাক আপনি বিদেশের কোনো এক কোম্পানিতে ইন্টারভিউয়ের ডাক পেলেন। ইন্টারভিউ বোর্ডে একজন ব্যক্তি রয়েছেন যিনি কিনা একজন চাইনিজ। এখন আপনি যদি একজন বাঙালী হওয়া স্বত্বেও ইন্টারভিউ বোর্ডের সেই চাইনিজ ব্যক্তিকে কিছু ম্যান্ড্রেইন ভাষা দিয়ে চমকে দিলেন ! কেমন হয় ব্যপারটা? আপনি কিন্তু খুব সহজেই সেই চাইনিজ ব্যক্তির কাছ থেকে ব্যক্তিগত সুপারিশ বা পার্সোনাল রিকমেন্ডেশন পেতে পারেন, যেটা চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে অন্যদের তুলনায় আপনাকে অনেক বেশি এগিয়ে রাখবে। আজকাল বিভিন্ন দেশের ভিসা পাওয়ার পূর্বেও কিন্তু আপনার তৃতীয় ভাষা অনেক বেশি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ফ্রেঞ্চ ভাষা জানা থাকলে যেমন আপনি খুব সহজেই কানাডা নির্ভর বিভিন্ন কোম্পানিতে ক্যারিয়ার গড়তে পারেন, ঠিক তেমনি করে স্প্যানিশ ভাষা মধ্য আমেরিকার অসংখ্য চাকরির দুয়ার আপনার জন্য খোলা থাকবে। ফ্রেঞ্চ, স্প্যানিশ, ল্যাটিন হলো এমন কিছু ভাষা যা অল্প দিনে সহজেই শিখে নেয়া সম্ভব এবং এগুলো কিছুটা ইংলিশ ভাষার সাথে সংগতিপূর্ণও।
চাকরির বাজার>>আজকের চাকরির খবর
একদিন খুব কৌতূহলবশত সাহস করে আমি যুক্তরাষ্ট্রের স্পেসএক্স এর জব অপরচুনিটি ট্যাবে ক্লিক করলাম। যেহেতু আমি অর্থনীতির একজন শিক্ষার্থী, সেহেতু আমি খুঁজতে লাগলাম স্পেসএক্সের বিপণন/অর্থ বিভাগে কি কি যোগ্যতার প্রয়োজন হয়। আমি সেখানে নতুন একটা ভাষার নাম দেখতে পেলাম, যার নাম Structured Query Language (SQL) । গুগলে কিছুক্ষণ ঘাটাঘাটির পর জানতে পারলাম, এটা একটা মেশিনারি ভাষা যা কিনা বিভিন্ন ডাটা প্রক্রিয়াকরণ কাজে ব্যবহার করা হয় এবং এটা অনেকটা চিরায়ত জাভা-সি ল্যাংগুয়েজের মতই কাজ করে থাকে, যদিও গঠনগত দিক দিয়ে এটা অনেকটাই ভিন্ন। আপনি যদি ভেবে থাকেন “আমি তো কমার্স/সোশ্যাল সায়েন্সের শিক্ষার্থী, মেশিনারি ভাষার মত বৈজ্ঞানিক জিনিসপাতি আমার কোনো কাজে আসবে না” , তাহলে আপনি নিজেই নিজেকে পথভ্রষ্ট করছেন। ২০১৯ এর শুরুতে এসে যদি আপনি নিজেকে এসব চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত না করতে পারলে ব্যপারটা আসলেই খুব দুঃখজনক হয়ে দাঁড়াবে।
যোগাযোগ হবে সকলের সাথে
আমি মনে করি, উপরে যে তিনটে টপিক নিয়ে আলোচনা করলাম আমরা, চাকরির ক্যারিয়ারে শক্ত একটা ভিত গড়তে তেমনি সমান প্রয়োজন রয়েছে এই কমিউনিকেশন স্কিলের। একটা গবেষণায় দেখা গিয়েছে, আমেরিকার এক-তৃতীয়াংশ যুবক নিজেদের কমিউকেশনের জন্য সোশ্যাল মিডিয়াকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকে। আমাদের দেশেও এটা লক্ষণীয়। আমরা সামনাসামনি কোনো ব্যক্তির সাথে কথা বলার তুলনায় ফেসবুক মেসেঞ্জারে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। ছোটকাল থেকেই একে অন্যের সাথে ফেস-টু-ফেস মতামত প্রকাশের যে ব্যর্থতা, মূলত সেটাই আমাদের চাকরির দরজা পর্যন্ত তাড়া করে। আজকাল সকল ছোট-বড় প্রতিষ্ঠান চায় যে তাদের কর্মীদের মধ্যে যেন একটা শক্তিশালী ইন্টারপার্সোনাল কমিউনিকেশন স্কিল বিদ্যমান থাকে। খুব গোছানো কিছু বাক্যে নিজের আইডিয়া প্রেজেন্ট করা, অন্যের মতামতকে সম্মান করা, প্রত্যেকের কাছ থেকেই নতুন কিছু শেখা- এসব জিনিসই যোগাযোগ দক্ষতা বাড়িয়ে নিতে অনেক বেশি সহায়তা করে। গুগলের মত প্রতিষ্ঠান নিজেদের ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামের ৫০ শতাংশ সাজায় কমিউনিকেশন আর টিমওয়ার্ককে বেস করে। আমাদের দেশের রবি-গ্রামীণফোনের মত টেলিকমিউনিকেশন প্রতিষ্ঠানগুলোও মূলত চাকরি নিয়োগ দেয়ার পূর্বে এসব বিষয়ে গুরুত্ব দেয়।
বেরিয়ে এসো নিজের খোলস থেকে!
“Everyone you’ll ever meet, knows something you don’t” – Bill Nye
বর্তমান সময়ে এসব দক্ষতা বাড়ানোর জন্য হাজারে মাধ্যম রয়েছে। রয়েছে TEDx, Charisma on Command, Practical Psychology এর মত কিছু ইউটিউব চ্যানেল। এছাড়াও বিভিন্ন ভলান্টিয়ারিং কাজ, লিডারশীপ ট্রেনিং ইত্যাদির মাধ্যমেও কিন্তু নিজের কমিউনিকেশন স্কিল বৃদ্ধি করা সম্ভব।
এক্সপেরিয়েন্সের জন্য দরকার এক্সপেরিয়েন্স
“চাকরি না পেলে কি করে এক্সপেরিয়েন্স হবে?”- আমার মনে হয় এই প্রশ্নটা বর্তমান সময়ের সর্বাধিক কমন একটা প্রশ্ন। প্রশ্নটা যত কঠিন, উত্তরটা কিন্তু ততই সোজা আর তা হলো “সুযোগের অপেক্ষায় থাকো” । আমাদের চারপাশে কিন্তু হাজারো কাজের সুযোগ প্রতিনিয়ত আসছে-যাচ্ছে। আমরা হয়তো সময়ের অভাব, ছোট কোম্পানি, অবৈতনিক ইত্যাদির দোহাই দিয়ে জিনিসগুলো এড়িয়ে যাচ্ছি। অথচ বাস্তবতা বলে, প্রত্যেকটা সুযোগ লুফে নেয়া উচিত, হোক সেটা ছোট নাহয় বড়। একটা ব্যক্তিগত গল্প শেয়ার করি…
একটা প্রতিযোগিতার সুবাদে একবার ডেইলি স্টারের অফিসে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। অফিসের মূল গেট পেরোতেই আমার মাথায় চট করে একটা ভাবনা চলে এলো যে, এখানে চাকরি পেলে কিন্তু মন্দ হয় না। তবে পরক্ষনেই মনে হলো যে, ইকোনমিক্সের শিক্ষার্থী হয়ে এখানে চাকরি পেতে বেশ কাঠখড় পোহাতে হবে। ঠিক সেই দিনই বাসায় এসে দেশের সবচেয়ে বড় বাংলা ব্লগসাইট সামহোয়্যার ইন ব্লগে লেখা শুরু করে দিলাম। কারণ আমি চাচ্ছিলাম আমার লেখালেখির অভিজ্ঞতা পেতে হলে এসবের বিকল্প নেই। এই চাওয়া থেকেই কিন্তু আমি কিছুদিন আগে টেন মিনিট স্কুল ব্লগেও একটা ইন্টার্নশিপের সুযোগ পেয়ে যাই।
আমাদের চিন্তা ভাবনাটা এরকম রাখতে হবে যেন আমরা যে প্রতিষ্ঠানে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চাচ্ছি, আমার অভিজ্ঞতাও যেন সেটার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। আমি যদি কোনো টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানিতে নিজের টার্গেট সেট করি, তাহলে আমার এক্সপেরিয়েন্সও নিতে হবে টেক নির্ভর। বিভিন্ন সেমিনারে অংশগ্রহণ, ইন্টার্নশিপ, ফ্রিল্যান্সিং, অলিম্পিয়াড-হ্যাকাথন-বিজনেস প্রতিযোগিতাগুলোতে অংশগ্রহণ কিংবা নিজেই একজন উদ্যোক্তা হওয়ার মাধ্যমে ভবিষ্যতে একটা ভাল জায়গায় নিজেকে দেখতে পাওয়ার আশা করাই যায়!
ঘুরে আসুনঃ চাকরির বাজার>>>চাকরীর খোঁজ
ভুলে যাবেন না কমন মিসটেকগুলো
আমরা চাকরি পাওয়ার জন্য সব গুণাবলী অর্জন করলাম। কিন্তু তীরে এসেও কিন্তু তরী প্রতিনিয়তই ডুবে। সারাদিন হাজারো পড়াশুনা করে, হাজারো অভিজ্ঞতা, দক্ষতা অর্জন করে দিনশেষে যদি আপনি নিজের সিভিটা ঠিকমত সর্টিং করতে না পারেন তাহলে হয়তো সহানুভূতি দেয়ার মানুষও খুঁজে পাওয়া দায় হয়ে পড়বে। অনেক সময় চাকরি পেতে এইসব খুঁটিনাটি বিষয়কেই মানদণ্ড ধরা হয়। একটু সতর্কতা আর সামান্য নির্দেশনা পেলেই কিন্তু আপনি সহজেই আপনার কাঙ্ক্ষিত চাকরির এক্সেপ্টেন্স লেটারটা সঙ্গে করে নিয়ে আসতে পারবেন। তার জন্য আজই শিখে নেয়া উচিত:
বর্তমানে চাকরি পাওয়া, ক্যারিয়ার গড়া নিয়ে আমাদের মধ্যে শুরু থেকেই যে ভয়টা কাজ করে, সেগুলোর একদমই প্রয়োজনীয়তা নেই। আমরা সবাই জানি, চাকরির খাতটা যুগের সাথে সাথে পরিবর্তিত হচ্ছে। একটা স্টাডিতে দেখা গিয়েছে, ২০১৯ সালের ৩৭ শতাংশ চাকরির অস্তিত্ব ২০১৮ সালে ছিলনা। অর্থাৎ এই ছোট একটা পরিসংখ্যান থেকেই আন্দাজ করা যায় আমাদের জব সেক্টর কতটা পরিবর্তিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। সুতরাং প্রতিটা চ্যালেঞ্জের জন্য আমাদের নিজেদের প্রস্তুত করে নিতে হবে। আর সেই শুরুটা হয়তো উপরের নির্দেশনা গুলো মেনে চলার মাধ্যমেই করা যায়। তাহলে এমনটা হতেও পারে যে, সকালে ঘুম থেকেই ওঠার সাথে সাথেই চাকরি আপনার দোরগোড়ায় কড়া নেড়ে বলবে- “নক নক!”
স্কুলের গন্ডি পার হতে না হতেই কমবেশি সকলেরই টনক নড়ে এই ভেবে “অনেক তো হলো ক্লাসে ফার্স্ট হওয়ার প্রতিযোগিতা, এবার নাহয় ফিউচার ক্যারিয়ার নিয়ে একটু সময় দেই।“ ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার কিংবা কর্পোরেট দুনিয়ায় সফল একটা প্রফেশন- এরকম একটা ক্যারিয়ারই কিন্তু আমরা সকলেই মনে মনে ধারণ করে থাকি। কিন্তু গ্র্যাজুয়েশনের পর কয়জনই বা মনমতন চাকরি পায়? এখন হয়তো অনেক গুরগম্ভির স্বভাবের মানুষজন মোটা কণ্ঠস্বরে বলে উঠবেন “যোগ্যতা থাকলেই চাকরি পাওয়া যায়।“ আমি কথাটার সাথে আরো একটি লাইন যোগ করে বলতে চাই “যোগ্যতার সাথে ছোট ছোট কিছু পন্থা অবলম্বন করলেই চাকরি পাওয়ার পথটা অনেকটাই সুগম হয়ে যাবে।“
এখন যদি বলা হয়, কিভাবে সহজে চাকরি পাওয়া সম্ভব? অনেকে হয়তো অনেক হাইপোথেটিকাল সুরে বলবে “আগে লক্ষ্য ঠিক করতে হবে, তারপর লক্ষ্য পূরণের জন্য যথাসম্ভব সবকিছু করতে হবে।” অত গভীরে না গিয়ে বরং জেনে রাখি, একটা সফল চাকরিজীবী হতে হলে সুনির্দিষ্ট কিছু এপ্রোচ রয়েছে, যেগুলো আপনার ক্যারিয়ার গড়তে নানাভাবে কাজে দিবে। কিভাবে? চলুন দেখে নিই…
সিজিপিএটা আরেকটু বাড়াতে হবে
এখনকার সময়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটা প্রচলিত মেন্টালিটি হলো, পড়াশুনার চেয়ে এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটিকে বেশি প্রাধান্য দেয়া। হ্যা, এটা সত্য যে আজকের চাকরির বাজারে টিকে থাকতে হলে পড়াশুনার পাশাপাশি এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটি অনেক বেশি জরুরি। তবে মুহাম্মদ জাফর ইকবার স্যার একবার বলেছিলেন,
“পড়াশুনা হলো ১ এবং এক্সট্রা কারিকুলাম এক্টিভিটি হলো ০। ১ এর আগে যতই শূন্য বসানো হোক না কেন, সংখ্যাটির ভ্যালু কিন্তু অপরিবর্তিতই থাকবে। কিন্তু ১ এর পরে যত শূন্য বসানো যায়, সংখ্যাটির ভ্যালু ততই বড় হতে থাকবে।“
কোনো সাবজেক্টকেই ছোট করে দেখার অবকাশ নেই। নিজের পছন্দমত সাবজেক্ট পাননি বলে শুধুমাত্র ন্যূনতম একটা গ্রেডের পেছনে ছোটা অনর্থক। তারচেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটা বছর কষ্ট করে ভালো একটা রেজাল্ট নিয়ে বের হতে পারলে নানাদিকে ক্যারিয়ার করার অনেক সুযোগ আপনা আপনিই সামনে চলে আসবে। জেনে রাখা ভাল- বাংলাদেশে সিজিপিএ ৩.০ এর নিচের যেকোনো গ্রেডের ট্যাগলাইন সঙ্গে নিয়ে স্বনামধন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরির আবেদন করাটা অনেক বেশি বিপদজনক।
শুধুমাত্র ব্যক্তিগত সিভিতে দুটো লাইন বেশি লেখার জন্য আমরা অনেক সময় পড়াশুনা ভুলে বিভিন্ন ক্লাব এক্টিভিটি, সোশ্যাল এক্টিভিটি নিয়ে মেতে থাকি। তারপর দেয়া যায় যে আপনার সিভিটা খুলে দেখার সাথে সাথে সেটা বাতিলের খাতায় চলে যায়। ফেসবুকের যুগে “এত পড়াশুনা করে কি হবে, একদিন তো মরেই যাবো”- এসব ফ্যান্টাসিতে বুঁদ না হয়ে পরের সেমিস্টারে নিজের সিজিপিএ আরেকটু বাড়িয়ে নেয়াটাই হয়তো বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
হোক কিছু লেখাপড়ার বাহিরেও
কাজী আইটি ক্যারিয়ার বুটক্যাম্পের স্টেজে আয়মান সাদিক ভাইয়া আমাদের এডুকেশন সিস্টেম নিয়ে একটা ধারণা দিয়েছিলেন, যেটার নাম হলো “ডিগ্রি ইনফ্লেশন।“ মানি ইনফ্লেশন বা মুদ্রাস্ফীতি তো সকলেরই জানা রয়েছে, বিশেষ করে বিবিএ কিংবা ইকোনমিক্স এর শিক্ষার্থীদের। মানি ইনফ্লেশন হলে যেভাবে টাকার মূল্য ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে, ঠিক সেভাবেই আজকের শিক্ষাব্যবস্থায় ডিগ্রির মূল্য কমতে শুরু করছে। এটির নামই হচ্ছে ডিগ্রি ইনফ্লেশন। অর্থাৎ কেবল শিক্ষাগত যোগ্যতার উপর ভর করে চাকরির আশা করাটা একরকমের বোকামি হবে। তাই নিজের ফিউচার ক্যারিয়ারটাকে আরেকটু শানিয়ে নিতে লেখাপড়ার পাশাপাশি আজই শুরু করে দেয়া উচিত নতুন কোনো এক্টিভিটি। সেটা শুরু হতে পারে ভার্সিটিতে সফল কোনো ইভেন্ট আয়োজনের মাধ্যমে, মডেল ইউনাইটেড ন্যাশনস এ কোনো দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার মাধ্যমে কিংবা বিওয়াইএলসির মত কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে লিডারশীপ সংক্রান্ত কোনো ট্রেনিং নেয়ার মাধ্যমে।
আগামী দিনগুলোতে হাজার হাজার গ্র্যাজুয়েটদের মাঝে এসব ছোট-বড় অভিজ্ঞতাই আপনাকে অনন্য করে তুলবে। মনে রাখতে হবে, আপনার এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটিগুলো যেন আপনার কাঙ্ক্ষিত ক্যারিয়ার রিলেটেড হয়। তাই বলে কেউ নিজেদের ভাল গান গাওয়া অথবা ভার্সিটির অডিটোরিয়ামের স্টেজ কাঁপানো নাচকে এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটির কাতারে না ফেলাটাই শ্রেয়, কেননা আক্ষরিক অর্থে এগুলো কর্পোরেট ক্যারিয়ারের জন্য খুব বেশি একটা উপযোগী হবেনা।
বাড়তি ভাষা জেনে রাখি
বাংলা-ইংলিশ তো কমবেশি আমরা সবাই জানি। এখন ধরা যাক আপনি বিদেশের কোনো এক কোম্পানিতে ইন্টারভিউয়ের ডাক পেলেন। ইন্টারভিউ বোর্ডে একজন ব্যক্তি রয়েছেন যিনি কিনা একজন চাইনিজ। এখন আপনি যদি একজন বাঙালী হওয়া স্বত্বেও ইন্টারভিউ বোর্ডের সেই চাইনিজ ব্যক্তিকে কিছু ম্যান্ড্রেইন ভাষা দিয়ে চমকে দিলেন ! কেমন হয় ব্যপারটা? আপনি কিন্তু খুব সহজেই সেই চাইনিজ ব্যক্তির কাছ থেকে ব্যক্তিগত সুপারিশ বা পার্সোনাল রিকমেন্ডেশন পেতে পারেন, যেটা চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে অন্যদের তুলনায় আপনাকে অনেক বেশি এগিয়ে রাখবে। আজকাল বিভিন্ন দেশের ভিসা পাওয়ার পূর্বেও কিন্তু আপনার তৃতীয় ভাষা অনেক বেশি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ফ্রেঞ্চ ভাষা জানা থাকলে যেমন আপনি খুব সহজেই কানাডা নির্ভর বিভিন্ন কোম্পানিতে ক্যারিয়ার গড়তে পারেন, ঠিক তেমনি করে স্প্যানিশ ভাষা মধ্য আমেরিকার অসংখ্য চাকরির দুয়ার আপনার জন্য খোলা থাকবে। ফ্রেঞ্চ, স্প্যানিশ, ল্যাটিন হলো এমন কিছু ভাষা যা অল্প দিনে সহজেই শিখে নেয়া সম্ভব এবং এগুলো কিছুটা ইংলিশ ভাষার সাথে সংগতিপূর্ণও।
চাকরির বাজার>>আজকের চাকরির খবর
একদিন খুব কৌতূহলবশত সাহস করে আমি যুক্তরাষ্ট্রের স্পেসএক্স এর জব অপরচুনিটি ট্যাবে ক্লিক করলাম। যেহেতু আমি অর্থনীতির একজন শিক্ষার্থী, সেহেতু আমি খুঁজতে লাগলাম স্পেসএক্সের বিপণন/অর্থ বিভাগে কি কি যোগ্যতার প্রয়োজন হয়। আমি সেখানে নতুন একটা ভাষার নাম দেখতে পেলাম, যার নাম Structured Query Language (SQL) । গুগলে কিছুক্ষণ ঘাটাঘাটির পর জানতে পারলাম, এটা একটা মেশিনারি ভাষা যা কিনা বিভিন্ন ডাটা প্রক্রিয়াকরণ কাজে ব্যবহার করা হয় এবং এটা অনেকটা চিরায়ত জাভা-সি ল্যাংগুয়েজের মতই কাজ করে থাকে, যদিও গঠনগত দিক দিয়ে এটা অনেকটাই ভিন্ন। আপনি যদি ভেবে থাকেন “আমি তো কমার্স/সোশ্যাল সায়েন্সের শিক্ষার্থী, মেশিনারি ভাষার মত বৈজ্ঞানিক জিনিসপাতি আমার কোনো কাজে আসবে না” , তাহলে আপনি নিজেই নিজেকে পথভ্রষ্ট করছেন। ২০১৯ এর শুরুতে এসে যদি আপনি নিজেকে এসব চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত না করতে পারলে ব্যপারটা আসলেই খুব দুঃখজনক হয়ে দাঁড়াবে।
যোগাযোগ হবে সকলের সাথে
আমি মনে করি, উপরে যে তিনটে টপিক নিয়ে আলোচনা করলাম আমরা, চাকরির ক্যারিয়ারে শক্ত একটা ভিত গড়তে তেমনি সমান প্রয়োজন রয়েছে এই কমিউনিকেশন স্কিলের। একটা গবেষণায় দেখা গিয়েছে, আমেরিকার এক-তৃতীয়াংশ যুবক নিজেদের কমিউকেশনের জন্য সোশ্যাল মিডিয়াকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকে। আমাদের দেশেও এটা লক্ষণীয়। আমরা সামনাসামনি কোনো ব্যক্তির সাথে কথা বলার তুলনায় ফেসবুক মেসেঞ্জারে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। ছোটকাল থেকেই একে অন্যের সাথে ফেস-টু-ফেস মতামত প্রকাশের যে ব্যর্থতা, মূলত সেটাই আমাদের চাকরির দরজা পর্যন্ত তাড়া করে। আজকাল সকল ছোট-বড় প্রতিষ্ঠান চায় যে তাদের কর্মীদের মধ্যে যেন একটা শক্তিশালী ইন্টারপার্সোনাল কমিউনিকেশন স্কিল বিদ্যমান থাকে। খুব গোছানো কিছু বাক্যে নিজের আইডিয়া প্রেজেন্ট করা, অন্যের মতামতকে সম্মান করা, প্রত্যেকের কাছ থেকেই নতুন কিছু শেখা- এসব জিনিসই যোগাযোগ দক্ষতা বাড়িয়ে নিতে অনেক বেশি সহায়তা করে। গুগলের মত প্রতিষ্ঠান নিজেদের ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামের ৫০ শতাংশ সাজায় কমিউনিকেশন আর টিমওয়ার্ককে বেস করে। আমাদের দেশের রবি-গ্রামীণফোনের মত টেলিকমিউনিকেশন প্রতিষ্ঠানগুলোও মূলত চাকরি নিয়োগ দেয়ার পূর্বে এসব বিষয়ে গুরুত্ব দেয়।
বেরিয়ে এসো নিজের খোলস থেকে!
“Everyone you’ll ever meet, knows something you don’t” – Bill Nye
বর্তমান সময়ে এসব দক্ষতা বাড়ানোর জন্য হাজারে মাধ্যম রয়েছে। রয়েছে TEDx, Charisma on Command, Practical Psychology এর মত কিছু ইউটিউব চ্যানেল। এছাড়াও বিভিন্ন ভলান্টিয়ারিং কাজ, লিডারশীপ ট্রেনিং ইত্যাদির মাধ্যমেও কিন্তু নিজের কমিউনিকেশন স্কিল বৃদ্ধি করা সম্ভব।
এক্সপেরিয়েন্সের জন্য দরকার এক্সপেরিয়েন্স
“চাকরি না পেলে কি করে এক্সপেরিয়েন্স হবে?”- আমার মনে হয় এই প্রশ্নটা বর্তমান সময়ের সর্বাধিক কমন একটা প্রশ্ন। প্রশ্নটা যত কঠিন, উত্তরটা কিন্তু ততই সোজা আর তা হলো “সুযোগের অপেক্ষায় থাকো” । আমাদের চারপাশে কিন্তু হাজারো কাজের সুযোগ প্রতিনিয়ত আসছে-যাচ্ছে। আমরা হয়তো সময়ের অভাব, ছোট কোম্পানি, অবৈতনিক ইত্যাদির দোহাই দিয়ে জিনিসগুলো এড়িয়ে যাচ্ছি। অথচ বাস্তবতা বলে, প্রত্যেকটা সুযোগ লুফে নেয়া উচিত, হোক সেটা ছোট নাহয় বড়। একটা ব্যক্তিগত গল্প শেয়ার করি…
একটা প্রতিযোগিতার সুবাদে একবার ডেইলি স্টারের অফিসে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। অফিসের মূল গেট পেরোতেই আমার মাথায় চট করে একটা ভাবনা চলে এলো যে, এখানে চাকরি পেলে কিন্তু মন্দ হয় না। তবে পরক্ষনেই মনে হলো যে, ইকোনমিক্সের শিক্ষার্থী হয়ে এখানে চাকরি পেতে বেশ কাঠখড় পোহাতে হবে। ঠিক সেই দিনই বাসায় এসে দেশের সবচেয়ে বড় বাংলা ব্লগসাইট সামহোয়্যার ইন ব্লগে লেখা শুরু করে দিলাম। কারণ আমি চাচ্ছিলাম আমার লেখালেখির অভিজ্ঞতা পেতে হলে এসবের বিকল্প নেই। এই চাওয়া থেকেই কিন্তু আমি কিছুদিন আগে টেন মিনিট স্কুল ব্লগেও একটা ইন্টার্নশিপের সুযোগ পেয়ে যাই।
আমাদের চিন্তা ভাবনাটা এরকম রাখতে হবে যেন আমরা যে প্রতিষ্ঠানে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চাচ্ছি, আমার অভিজ্ঞতাও যেন সেটার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। আমি যদি কোনো টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানিতে নিজের টার্গেট সেট করি, তাহলে আমার এক্সপেরিয়েন্সও নিতে হবে টেক নির্ভর। বিভিন্ন সেমিনারে অংশগ্রহণ, ইন্টার্নশিপ, ফ্রিল্যান্সিং, অলিম্পিয়াড-হ্যাকাথন-বিজনেস প্রতিযোগিতাগুলোতে অংশগ্রহণ কিংবা নিজেই একজন উদ্যোক্তা হওয়ার মাধ্যমে ভবিষ্যতে একটা ভাল জায়গায় নিজেকে দেখতে পাওয়ার আশা করাই যায়!
ঘুরে আসুনঃ চাকরির বাজার>>>চাকরীর খোঁজ
ভুলে যাবেন না কমন মিসটেকগুলো
আমরা চাকরি পাওয়ার জন্য সব গুণাবলী অর্জন করলাম। কিন্তু তীরে এসেও কিন্তু তরী প্রতিনিয়তই ডুবে। সারাদিন হাজারো পড়াশুনা করে, হাজারো অভিজ্ঞতা, দক্ষতা অর্জন করে দিনশেষে যদি আপনি নিজের সিভিটা ঠিকমত সর্টিং করতে না পারেন তাহলে হয়তো সহানুভূতি দেয়ার মানুষও খুঁজে পাওয়া দায় হয়ে পড়বে। অনেক সময় চাকরি পেতে এইসব খুঁটিনাটি বিষয়কেই মানদণ্ড ধরা হয়। একটু সতর্কতা আর সামান্য নির্দেশনা পেলেই কিন্তু আপনি সহজেই আপনার কাঙ্ক্ষিত চাকরির এক্সেপ্টেন্স লেটারটা সঙ্গে করে নিয়ে আসতে পারবেন। তার জন্য আজই শিখে নেয়া উচিত:
- সিভি ও কভার লেটার লেখার পরিপূর্ণ নিয়মাবলী
- ইমেইল লেখার সঠিক দিকনির্দেশনা
- ইন্টারভিউ রুমের আদবকেতা
- বিভিন্ন সাধারণ শুভেচ্ছাবাচক বাক্যের উত্তরে সঠিক জবাব প্রদান
- নিজস্ব আচার-আচরনে প্রোফেশনালিজমের পরিচয়
বর্তমানে চাকরি পাওয়া, ক্যারিয়ার গড়া নিয়ে আমাদের মধ্যে শুরু থেকেই যে ভয়টা কাজ করে, সেগুলোর একদমই প্রয়োজনীয়তা নেই। আমরা সবাই জানি, চাকরির খাতটা যুগের সাথে সাথে পরিবর্তিত হচ্ছে। একটা স্টাডিতে দেখা গিয়েছে, ২০১৯ সালের ৩৭ শতাংশ চাকরির অস্তিত্ব ২০১৮ সালে ছিলনা। অর্থাৎ এই ছোট একটা পরিসংখ্যান থেকেই আন্দাজ করা যায় আমাদের জব সেক্টর কতটা পরিবর্তিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। সুতরাং প্রতিটা চ্যালেঞ্জের জন্য আমাদের নিজেদের প্রস্তুত করে নিতে হবে। আর সেই শুরুটা হয়তো উপরের নির্দেশনা গুলো মেনে চলার মাধ্যমেই করা যায়। তাহলে এমনটা হতেও পারে যে, সকালে ঘুম থেকেই ওঠার সাথে সাথেই চাকরি আপনার দোরগোড়ায় কড়া নেড়ে বলবে- “নক নক!”
Comments
Post a Comment
Waiting for your replied